ওয়ার্ডপ্রেস কি? ওয়ার্ডপ্রেস পরিচিতি। ওয়ার্ডপ্রেস কেন শিখবেন?

WordPress কি এবং কি কি কাজে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করা হয়, এই ব্যাপারে প্রত্যেক web designer  ব্লগার আপনাকে ভালো ভাবে বলে দিতে পারবে। বিশ্বের সব থেকে সেরা এবং প্রচলিত CMS Software হলো ওয়ার্ডপ্রেস। আপনারা যারা অনলাইনে কোন কিছু করার জন্য ঘাটাঘাটি করেন তারা ওয়ার্ডপ্রেস নামটির সাথে কম বেশি সবাই পরিচিতি। আপনি কোডিং এর ঝামেলা ছাড়াই বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য র্বতমান সময়ে ওয়ার্ডপ্রেস খুবই জনপ্রিয়। এই অনলাইন সফটওয়্যার এর মাধ্যমে, যেকোনো ধরণের ওয়েব সাইট বানানো অনেক সহজ।

ওয়ার্ডপ্রেস হলো সবচেয়ে সহজ, শক্তিশালী এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্লগিং বা ওয়েবসাইট তৈরির ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার। আপনি হয়তো জেনে অবাক হবেন , ইন্টারনেটের প্রথম সারির ১ মিলিয়ন ওয়েবসাইটের মাঝে প্রায় ৪২ শতাংশ ওয়েবসাইটই তৈরি করা হয়েছে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে।

WordPress online CMS software ব্যবহার করাটা কিন্তু অনেক সহজ। এবং বিশ্বের প্রায় ৬৫% ওয়েবসাইট আজ ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা তৈরি। Knitcraft দ্বারা প্রচার করা সার্ভেতে পাওয়া গেছে যে, বিশ্বের প্রায় পৃথিবীতে প্রায় ৭৫ হাজার লক্ষ থেকেও বেশি ওয়েবসাইট WordPress CMS Software দ্বারা বানানো।


যদি ওয়ার্ডপ্রেসের ব্যাপারে আপনার কোনো ধরনের জ্ঞান না থাকে, তাহলে আপনি চিন্তা করবেন না। আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের ওয়ার্ডপ্রেস এর বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিবো। যেমনঃ- ওয়ার্ডপ্রেস কাকে বলে, ওয়ার্ডপ্রেস কেন শিখবেন, ওয়ার্ডপ্রেস শিখতে যা জানতে হবে, ওয়ার্ডপ্রেস শিখে কি লাভ, এর সুবিধা কি, ওয়ার্ডপ্রেস এর পরিচিতি সম্পর্কে জানবো একজন ব্লগার হিসেবে কেন ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করাটা জরুরি।

যদি আপনি একজন ওয়েব ডিজাইনার হয়ে থাকেন অথবা ওয়েব ডেভেলপার হন অথবা ব্লগার হন বা নিজেই একটি Perfect Website তৈরি করার কথা ভাবছেন, তাহলে ওয়ার্ডপ্রেসের ব্যাপারে জেনে নেওয়াটা আপনার জন্য অনেক জরুরি ।

আরো পড়ুনঃ-  ইমেইল মার্কেটিং কি? ইমেইল মার্কেটিং শিখার সহজ উপায়। 

ওয়ার্ডপ্রেস এমন একটি সহজ এবং জনপ্রিয় মাধ্যম যেটা ব্যবহার করে আপনি নিজের একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি করতে পারবেন। আপনি জানলে অবাক হবেন যে, ওয়ার্ডপ্রেস এর সিকিউরিটও অনেক মজবুত। এবং বর্তমানে যত ওয়েবসাইট আছে তার মধ্যে ৩৮ শতাংশ Website WordPress দিয়ে তৈরি হয়েছে । পৃথিবীতে দিনে হাজার হাজার WordPress Website তৈরি করা হচ্ছে। এটা জেনে আরও অবাক হবেন যে বর্তমানে White House এর যে ওয়েবসাইট টি আছে সেটি ও ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

পেইজ সূচিপত্রঃ- ওয়ার্ডপ্রেস কি? ওয়ার্ডপ্রেস পরিচিতি। ওয়ার্ডপ্রেস কেন শিখবেন?

ওয়ার্ডপ্রেস কি

ওয়ার্ডপ্রেস হচ্ছে ডাইনামিক কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। যেখানে থেকে আপনি ডাইনামিক্যালি ওয়েবসাইটের কনটেন্ট পরিবর্তন করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে কোডিং করতে বা সাইটে কোনো বড় পরিবর্তন করতে হবে না। সব কিছু সিস্টেম মতো দেওয়া থাকবে আপনি শুধু আপনার কনটেন্ট পরিবর্তন করে দিবেন।

আপনি স্টাটিক ওয়েবসাইটে যেমন আপনি চাইলে কোনো ইমেজ বা আর্টিকেল বদলে দিতে পারেন না, এজন্য আপনাকে ওয়েব ডেভেলপারের সাথে যোগাযোগ করতে হয় । কিন্তু ডাইনামিক  সাইটের জন্য আপনাকে এর কিছুই করতে হবে না । এই পুরো প্রক্রিয়াটি কোডিং করে করতে গেলে অনেক পরিশ্রম যেমন করতে হবে, তেমনি সময়ও অনেক বেশি লাগবে । কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে যদি আপনি করেন তবে সময়ও যেমন বাঁচবে তেমনি পরিশ্রমও অনেক কম হবে।

আরো পড়ুনঃ- কম্পিউটারে বাংলা যুক্তবর্ণ বা যুক্তাক্ষর টাইপিং করে লেখার নিয়ম 

আপনি ভাবছেন এতো সহজে কিভাবে? না সহজে আসলে নয়। আপনি হয়তো পরিশ্রম অনেক কম করছেন কিন্তু এর পেছনে কাজ করছে একদম নিরলস স্বেচ্ছাসেবী। যারা আপনাকে একটি সিস্টেম উপহার দিচ্ছে পেছনে থেকে তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞ থাকবেন।

WordPress মানে কি এই ব্যাপারে যদি অল্প টেকনিক্যালি বলা হয়, তাহলে সেটাও বুঝে নেওয়াটা অনেক সহজ। ওয়ার্ডপ্রেস হলো সব থেকে বেশি পপুলার একটি Open Source Content Management System ( CMS ) যেটা জেনেও নিজের ওয়েব সার্ভরে ফ্রিতেই ইনস্টল করে, যেকোনো রকমের একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারবেন। ওয়ার্ডপ্রেস বিশ্বের সব থেকে শক্তিশালী কিন্তু অনেক সহজ একটি ফ্রি অনলাইন ওয়েবসাইট তৈরি করার মাধ্যম যেটাকে PHP দ্বারা লিখা হয়েছে। 

আপনি ওয়ার্ড প্রেস দ্বারা ওয়েবসাইট বানানোর জন্য, আপনার একটি ওয়েব হোস্টিং একাউন্ট বা হোস্টিং সার্ভার থাকতে হবে। এরপর আপনি নিজের সার্ভারে এই ওয়েবসাইট CMS Install  করে যেকোনো ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি নিতে পারবেন।

CMS Software গুলিও ব্লগ ও ওয়েবসাইট তৈরির জন্য অনেক পপুলার। কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেস এর তুলনায় অনেক বেশি কম।

ওয়ার্ডপ্রেস এর ইতিহাস 

ওয়ার্ডপ্রেেসের প্রতিষ্ঠাতা ম্যাট মুলেন ওয়েগ ২০০৩ সালের মে মাসে সর্বপ্রথম ওয়ার্ডপ্রেস প্রকাশ করে। এরপর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ওয়ার্ডপ্রেস খুব সফলতার সাথে চলে আসছে। তবে শুরুর দিকে ওয়ার্ডপ্রেস শুধু ব্লগিং এর জন্য ব্যবহার হলেও বর্তমানে নানা ধরণের ডাইনামিক ওয়েবসাইট তৈরিতেও ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার হয়ে থাকে। 

ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএস টি পিএইচপি ফ্রেমওয়ার্ক এবং মাইএস কিউএল ডেটাবেজ এর সমন্বিত রূপ। ২০০৯ সালে ওপেন সোর্স কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম শেয়ার মার্কেট রিপোর্ট অনুযায়ী দেখা যায় ওয়ার্ডপ্রেস অধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করে আর এভাবেই ওয়ার্ডপ্রেস সফলতার সাথে বর্তমান সময় পর্যন্ত চলে আসছে।

ওয়ার্ডপ্রেস এর সুবিধা 

ওয়ার্ডপ্রেস সব থেকে জনপ্রিয় অনলাইনে ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করা যায় বলে এই সফটওয়্যার ব্যবহার করার অনেক ভালো সুবিধা রয়েছে। ওয়ার্ডপ্রেস সফটওয়্যার এর প্রচুর লাভ রয়েছে। 

ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ব্যবহার করার জন্য আপনাকে কোনো টাকা দিতে হবে না। কারণ প্রথমেই এই ধরণের কোনো অ্যাডভান্সড সফটওয়্যার আপনারা ফ্রীতেই পেয়ে যাচ্ছেন।

ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে একটি ওয়েব সাইট তৈরি করা এবং রান করানো অনেক সহজ।

এই অনলাইন সফটওয়্যার এর মাধ্যমে আপনি যেকোনো জায়গায় থেকে একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে সহজে কাজ করতে পারবেন।

ওয়ার্ডপ্রেস ভালো CMS Award প্রাপ্ত।

অনলাইন জগতে ওয়ার্ডপ্রেস সম্পূর্ণ SEO Friendly. এখানে এমন কিছু সহজ এবং Standard Code ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি যেগুলোর জন্য অনেক সহজে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট গুগল সার্চইঞ্জিনে Index হয়ে যায়। 

বিশ্বের ২০২ মিলিয়ন এরও বেশি ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি। 

পৃথিবীতে ওয়ার্ডপ্রেস কোটি কোটি ইউজার ব্যবহার করে। এই কারণে তারা নিরাপত্তার দিকে বিশেষ ভাবে ধ্যান দিয়েছে। তাছাড়া এটা হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা ৯৮% অসম্ভব। 

আপনি CMC Software ব্যবহার করে শুধু ব্লগ বা ওয়েবসাইট নয় আপনি যেকোনো ধরণের সাইট তৈরি করতে পারবেন। যেমনঃ- সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট, ই-কমার্স ওয়েবসাইট,ফোরাম সাইট, কোম্পানি ওয়েবসাইট ইত্যাদি Website তৈরি করতে পারবেন এই ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে। 

ওয়ার্ডপ্রেস শিখার জন্য কোনো Technical Skills এর প্রয়োজন নেই।

আপনি এখানে হাজার হাজার প্লাগিন এবং থিম সম্পূর্ণ ফ্রিতে পেয়ে যাবেন। যেগুলো ব্যবহার করে সম্পূর্ণ ফ্রিতে এবং সুন্দর আকর্ষণীয় ডিজাইন করে নিতে পারবেন। 

আপনি অনেক সহজে থিম পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের ডিজাইন পরিবর্তন করতে পারবেন। 

আপনি ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন করার সময় এডিট অপশান থেকে সহজে live Preview সহ দেখতে পাবেন। 

WordPress. Org এবং WordPress. Com এর মধ্যে পার্থক্য কী?

আপনি কি জানতেন যে WordPress. Org এবং  WordPress. Com আসলে দুটি আলাদা প্ল্যাটফর্ম? যদি না জেনে থাকেন তাহলে জেনে নিনঃ-

ওয়ার্ডপ্রেসের দুটি ভার্সন রয়েছে, একটি WordPress.com আরেকটি wordpress.com একটি মূলত অনলাইনে ফ্রি ওয়েবসাইট বা ব্লগ খোলার সুবিধা, অন্যটি হলো সিএমএস ( CMS= Customers management System)  যার সাহায্যে আপনি আপনার নিজস্ব ওয়েবসাইট খুলে সেটাকে মনের মতো করে গড়ে তুলতে পারবেন। দুটোরই বিভিন্ন রকম সুবিধা -অসুবিধা আছেঃ- আমরা প্রথমেই দেখি WordPress.com এর সুবিধা - অসুবিধাঃ- WordPress.Com সকলের জন্য সম্পূর্ণ ফ্রী একটি উন্মুক্ত লেখালেখি করার প্ল্যাটফর্ম। এখানে ব্লগ বা সাইট বানিয়ে নিতে আপনাকে কোনো অর্থ গুণতে হবে না কারণ যাবতীয় ডোমেইন -হোস্টিং সব তারাই দিচ্ছে। জানা থাকা লাগবে না কোনো প্রোগ্রামিং বা কোডিং অভিজ্ঞতা। এখানে আপনার জন্য ইতিমধ্যেই একটি ব্লগ তৈরি করে দেওয়াই আছে। আপনার কাজ হবে ড্রাগ এন্ড ড্রপের সাহায্যে সাইট সাজিয়ে লেখা শুরু করে দেয়া। 

আরো পড়ুনঃ- ব্লগ কি। ব্লগ লিখে আয় করুন বিভিন্ন প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে।

মনে করুন আপনি একটি ব্লগ বানাবেন যার নাম হবে আমার সোনার বাংলা তাহলে WordPress.Com এই আপনি সাইটটি খুলতে পারবেন এভাবে। amarsonarbangla. WordPress.Com।  যেহেতু আপনাকে WordPress একটি ফ্রি সাইট দিচ্ছে তাই নামের শেষে WordPress.Com কথাটি থাকবেই। লেখালিখি করার জন্য আপনি এখানে পাবেন ৩জিবি জায়গা একদম ফ্রি।

অসুবিধার জায়গাটি হচ্ছে, আপনি যদি এখানে ব্লগ বানিয়ে টাকা কামাতে চান তবে আপনার সেই আশার গুড়ে বালি। কারণ এখানে Google absence nonallowed. এছাড়াও আপনি এখানে কোনো প্লাগিং, থিম,কোড ইচ্ছে হলেই ব্যবহার বা পরিবর্তন করতে পারবেন না। ডিফল্টভাবে WordPress. Com যা দিয়ে রেখেছে সেটা দিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। 

WordPress. Org এর সুবিধা -অসুবিধা 

আগেই বলা হয়েছে এটি একটি সিএমএস। আপনি যদি প্রফেশনাল ওয়েবসাইট বানাতে চান তবে WordPress. Org হতে পারে আপনার সবচেয়ে বড় ভরসার নাম। আপনার পছন্দ করা. Com/. Net/. Info বা ফ্রিতে করা. Co.cc/ tk যেকোনো ডোমেইন হোস্টিং এইটি ইন্সটল করে ব্যবহার করতে পারেন। এর সুবিধার কথা বলে শেষ করা যাবে না, আপনি যদি HTML / CSS জানেন এবং সেই সাথে PHP তে বেসিক জ্ঞান থাকে তবে আপনি আপনার ওয়েবসাইট নিজের মতো করে বানাতে পারবেন। এবং এতে আপনার পছন্দমতো যতো খুশি জায়গা নিতে পারবেন সেটা হোক ৫ জিবি কিংবা ১০ জিবি। এটি তখন হয়ে যাবে আপনার নিজের সম্পত্তি, যেভাবে খুশি একটি ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন, আপনার সহযোগিতার জন্য রয়েছে হাজার থিম এবং প্লাগিন।

এটার অসুবিধা একটাই সেটা হলো সাইটের যাবতীয় সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা এবং ব্যাকাপ নেওয়ার বিষয় গুলো আপনাকে দেখতে হবে। তবে ওয়েবসাইট বানানো শেখার জন্য WordPress. Org এর বিকল্প খুব কমই আছে। 

ওয়ার্ডপ্রেস শিখতে কতদিন লাগবে?

প্রথমে অনেকে ভাবেন ওয়ার্ডপ্রেস অনেক কঠিন। কিন্তু আসলে সেটা নয়, কিছু আপনি ওয়ার্ডপ্রেস dashboard  ব্যবহার করলে অনেক সহজে শিখে যেতে পারবেন। তাছাড়া ইউটিউবে অনেক ধরনে ওয়ার্ডপ্রেস টিউটোরিয়াল রয়েছে সেটার মাধ্যমে আপনারা সহজে শিখতে পারবেন। 

তাই ওয়ার্ডপ্রেস এর আসল বিষয় গুলো হলো, আপনি কিভাবে আর্টিকেল লিখবেন , কিভাবে নিজের ওয়েবসাইট ডিজাইন করবেন, প্লাগিন কিভাবে ইন্সটল করবেন, থিম ইন্সটল করার নিয়ম এই সকল বিষয় গুলো কেবল একবার দেখলে শিখে যাবেন। 

আপনারা যদি এই গুলো নিয়ে এক থেকে দুই সপ্তাহ একটি চেষ্টা করেন তাহলে ওয়ার্ডপ্রেস সম্পূর্ণ সব কিছু জানতে পারবেন। মনে রাখবেন ওয়ার্ডপ্রেস খুব সহজ একটি বিষয় এখানে কোডিং জানার কোনো প্রয়োজন নেই। 

ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগইন কি বা কাকে বলে 

ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন হলো এমন একটি আলাদা সফটওয়্যার যেটাকে ওয়ার্ডপ্রেসে ইন্সটাল করে নিজের ব্লগার বা ওয়েবসাইটের কার্যক্ষমতা, ফিচারস গুলো বাড়িয়ে নিতে পারবেন । এই প্লাগইন গুলোর মধ্যে অধিক অংশ আপনারা ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন।

WordPress Plugin আপনার ওয়েবসাইটের যেকোনো Function এর কর্মক্ষমতা অধিক বাড়িয়ে ‍দিতে পারে। এবং তাছাড়া বিভিন্ন নতুন নতুন Function ওয়েবসাইটে যোগ করতে পারে। 

আপনি এটা, কিছু পরিমাণে মোবাইলের  application এর মতোই বলা যেতে পারে। যেভাবে আমরা google play store এই গিয়ে বিভিন্ন রকমের অ্যাপ মোবাইলে ফোনে ইন্সটল করে নতুন নতুন Function যোগ করি ঠিক সেভাবেই ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটেও আমরা বিভিন্ন ফ্রি বা পেইড Plugin install করে নিজের ওয়েবসাইটে অসংখ্যক Function যোগ করে নিতে পারি।

আরো পড়ুনঃ- ভিজিটর কি? কিভাবে আপনার ব্লগে ভিজিটর বাড়াবেন? তার উপায়।

ওয়ার্ডপ্রেস লোকদের মধ্যে এতোটা বিখ্যাত হওয়ার কারণ এটাও যে, নিজের ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে আলাদা করে যেকোনো Function যোগ করার জন্য আপনারা হাজার হাজার ফ্রি প্লাগইন পেয়ে যাবেন।

নিজের ব্লগে বা ওয়েবসাইটে প্লাগইন এর মাধ্যমে আলাদা করে Social media, Sharing button, Email Subscription box, Social Media Profiles, Website Security options , author box, related articles options এবং আরো হাজার হাজার নতুন Function যোগ করতে পারবেন।

অনেক সহজে আপনি নিজের ওয়েবসাইটকে নিজের হিসেবে তৈরি করতে পারবেন। আপনি সেটা ডিজাইনের দিক দিয়ে হোক নিরাপত্তার দিক দিয়ে হোক বা নতুন নতুন Function ওয়েবসাইটে যোগ দেওয়ার কথা হোক, সবটাই প্লাগইন ব্যবহার করে সহজেই করে নিতে পারবেন।

ওয়ার্ডপ্রেস কেন এত অধিক জনপ্রিয়

ওয়ার্ডপ্রেস অসাধারণ কারণ এর ফিচার বা বৈশিষ্ট্য অনেক বেশি। যে কোন মাধ্যম যেমনঃ- ডেক্সটপ বা ল্যাপটপ কম্পিউটার স্মার্টফোন অথবা ট্যাব এই ব্যবহার করা যায়। 

প্রতিটি মাধ্যম ব্যবহার করার জন্য এর স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং ক্রটিমুক্ত সফটওয়্যার বা অ্যাপ WordPress.org এর ওয়েবসাইটে ও অ্যাপ স্টোরে পাওয়া যায় এর মান সবসময়ই উন্নত হতে উন্নততর হচ্ছেই।

একটা ওয়েবসাইটকে যদি কোন কম্পিউটারের সাথে তুলনা করা হয়। তবে ওয়ার্ডপ্রেস হলো উইন্ডোজের মতো অপারেটিং সিস্টেম। আপনি যদি একবার ওয়েবসাইটে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল দিয়ে দিলেই ওয়েবসাইট রেডি।

আরো পড়ুনঃ- নতুন করে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম। প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম 

কিন্তু কম্পিউটারে অপারেটিং সিস্টেমের সামান্য কিছু অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে কি খায়েশ মেটানো সম্ভব? অবশ্যই না, সেজন্য তো উপায় আছে। কম্পিউটারের জন্য তৈরি রয়েছে লাখ লাখ এ্যাপ্লিকেশন, যেগুলোর মাধ্যমে মনের মতো করে কম্পিউটারকে ব্যবহার করা যায়।

আপনি ঠিক একইরকমভাবে ওয়ার্ডপ্রেসে ওয়েবসাইট যুক্ত করা মাত্র ওয়েবসাইটে ওয়ার্ডপ্রেসে সামান্য কিছু ডিফল্ট সিস্টেম যুক্ত হয়। সেগুলো পছন্দ না হলে কম্পিউটারের এ্যাপ্লিকেশনের মতো ইন্সটল করে নেয়া যায় প্রয়োজনীয় কাজের বিভিন্ন প্লাগইন । আপনি বিভিন্ন ডিজাইনের থিম যোগ করতে পারবেন ।

বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেসের নিজস্ব স্টোরে রয়েছে পাঁচ হাজারের বেশি থিম এবং ৫০ হাজারের বেশি প্লাগইন। এই সুবিধা শুধুমাত্র ওয়ার্ডপ্রেসেই পাওয়া যায়। প্লাগইন সুবিধাই ওয়ার্ডপ্রেসকে তুলে দিয়েছে অন্য যেকোনো প্লাটফর্ম হতে দূরতম উচ্চতায়।

ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে কি কি ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব?

কয়েক বছর আগে পর্যন্ত ওয়ার্ডপ্রেস ছিল শুধুমাত্র একটি ব্লগ তৈরির মাধ্যম। মানুষ ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করতো একমাত্র ব্লগ তৈরির জন্য । কিন্তু এখন, ওয়ার্ডপ্রেস নিজেকে সাঁজিয়েছে সম্পূর্ণ নতুন ও আকর্ষণীয় রূপে। ওয়ার্ড প্রেসে যুক্ত করেছে প্লাগইন ও থিমের মতো অনন্য কিছু ফিচার এবং সেগুলোকে সমৃদ্ধ করে চলেছে নিয়মিতভাবে। 

ওয়ার্ডপ্রেস বর্তমানে শুধু ব্লগই নয়, যেকোনো প্রকার ওয়েবসাইট তৈরির জন্য আদর্শ মাধ্যম। ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে এখন ব্লগ থেকে শুরু করে যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট, পোর্টিফোলিও ওয়েবসাইট, ই-কমার্স ওয়েবসাইটসহ প্রায় সব ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলা সম্ভব।

আপনি ওয়ার্ডপ্রেসের মাধ্যমে স্বল্প সময় ব্যয় করে তৈরি করে ফেলতে পারেন বিভিন্ন ধরণের ওয়েবসাইট।

ব্লগ

পোর্টিফোলিও

স্ট্রিমিং

অনলাইন স্টোর

প্রাতিষ্ঠানিক কেন্দ্রিক

ব্যবসায়ীক

ফোরাম

মেম্বারশিপ সাইট

ই-কমার্স

ভিডিও

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।

ওয়ার্ডপ্রেস কেন শিখবেন?

যদি আপনি চান অনলাইন ক্যারিয়ার গড়বেন। তাহলে আপনি যে কোন সেক্টরেই কাজ করেন না কেনো, আপনার ওয়ার্ডপ্রেস শিখা থাকলে তা আপনার জন্য বিশাল একপ্লাস পয়েন্ট। তাছাড়া আপনি যদি ওয়েবসাইট বানাতে চান, তাহলে ওয়ার্ডপ্রেস শিখার বিকল্প নেই বর্তমান বাজারে । আর আপনি যদি ওয়েবডেভেলাপমেন্ট ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে ওয়ার্ডপ্রেস শিখা আপনার জন্য  বাধ্যতামূলক ।

আপনি যদি চান শখের বসে শুধু মাত্র একটা সাধারণ ওয়েবসাইট বানাবেন। তাহলেও  আপনি ওয়ার্ডপ্রেস শিখতে পারেন। এতে করে আপনাকে অনেক কঠিন কঠিন কোডিং শিখা লাগবেনা । ওয়ার্ডপ্রেসে রেডিমেট হাজার হাজার একটি ওয়েবসাইট বানাতে ও মেইনটেইন করতে পারবেন। 

কাদের জন্য উপযুক্ত?

যারা কোন ওয়েবসাইট দেখলেই কৌতুহলবশত তা বানাতেও চান তারা এই সেক্টরে বেশ ভালো করে থাকে। আমি বরাবরই বলে আসছি যে, প্রত্যেক কাজ করার জন্য আগ্রহের দরকার হয়। তবে যারা কম্পিউটার কোডিং করতে আগ্রহী তারাই এক্ষেত্রে ভালো করতে পারবে। ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলাপমেন্ট প্রোগ্লামিং করতে হয় । যারা কোড দেখতে পছন্দ করেন না তারা এই সেক্টরে না আসাই ভালো ।

মার্কেটের চাহিদা কেমন?

বর্তমানে সবচেয়ে বেশি চাহিদা হলো ওয়ার্ডপ্রেস এর। এতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই। বিশ্বে প্রতিদিন যত ওয়েবসাইট তৈরি হয় তার বেশিরভাগ তৈরি হয় শুধুমাত্র ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে। তাই আলাদা করে এইটা নিয়ে বর্ননা করার দরকার আছে বলে আমি মনে করি না।

আয় সম্ভাবনা কেমন?

ইন্টারন্যাশনাল ষ্টান্ডার্ড অনুযায়ী আপনি এভারেজ মানের একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে ২০০ ডলার থেকে ২০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি ২০০-৫০০ ডলারের মধ্যেই হয়ে থাকে। আর এভারেজ মানের একটি ওয়েবসাইটের কাজ শেষ করতে আপনার সময় লাগবে সর্বোচ্চ ৩ দিন। 

তাহলে বলা যেতে পারে যে, আপনি ওয়ার্ডপ্রেস ভালো জানলে মাসে মাত্র তিনটি কাজ করলেও ৬০০ ডলার অর্থাৎ ৫০০০০ টাকা আয় করা খুব একটা কঠিন নয়। জেনে রাখা ভালো যে, আমি শুধু এভারেজ এর কথা বলেছি। তবে একজন ভালো মানের ওয়ার্ডপ্রেস এক্সপার্ট এর আয় এভারেজ দুই হাজার ডলার প্রতি মাসে। তাছাড়া অনেক সময়ই আপনি টুকটাক সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার কাজ পারেন যা করতে হয়তো আপনার মাত্র ১৫ মিনিট লাগবে সবমিলিয়ে কিন্তু আপনার আয় হবে ৩০-১০০ ডলার। এইটি খুব মজার ব্যাপার। তবে ব্যাপার হলো যে,  আপনাকে এক্সপার্ট হতে হবে। কোন রকম কাজ শিখে আয় করা সম্ভব নয় এই সেক্টরে।

ওয়ার্ডপ্রেস শিখতে যা জানতে হবে

একজন দক্ষ ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার হওয়া সময় এবং কষ্ট সাপেক্ষ ব্যাপার। কোন প্রতিষ্ঠানই কাউকে দক্ষ ডেভেলপার হিসেবে গড়ে তুলতে পারে না বড়জোর এক্সপার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। দক্ষ ডেভেলপার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হলে নিজের পরিশ্রম ও প্রচেষ্টার বিকল্প নেই। তবে পরিকল্পিতভাবে লেগে থাকলে অবশ্যই শিখা সম্ভব। ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করার জন্য অবশ্যই এইচটিএমএল, সিএসএস জানতে হবে। সেই সঙ্গে জেকুইয়ারি, জাভাস্ক্রিপ্ট এবং ব্যাকএন্ড ডেভেলপমেন্টর জন্য পিএইচপি এবং মাইএসকিউএল জানার প্রয়োজন হবে। আর কেবল ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশনের জন্য এইচটিএমএল, সিএসএস এবং ওয়ার্ডপ্রেস ফ্রেমওয়ার্কেও ব্যবহার জানা থাকলেই চলবে।

আগেই বলেছি কিছু টিউটোরিয়াল পড়ে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল আর কিছু কাস্টমাইজেশন করতে পারলেই কেউ দক্ষ ডেভেলপার হয়ে যেতে পারেন। সেজন্য তাকে হয়তো এক্সপার্ট বলা চলে। দক্ষ হতে গেলে প্রচুর শ্রম, মেধা এবং সময়ের প্রয়োজন। তাই চেষ্টা করুন এক্সপার্টের চেয়ে বেশি কিছু হতে।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url