মহিলাদের তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও ফজিলত

মাহে রমজানের নফল ইবাদতের মধ্যে ইতিকাফের সময় তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। আরবি "তাহাজ্জুদ" শব্দের আভিধানিক অর্থ রাত জাগরণ বা নিদ্রা ত্যাগ করে রাতে নামাজ পড়া। শরিয়তের পরিভাষায় রাত দ্বিপ্রহরের পর ঘুম থেকে জেগে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে নামাজ আদায় করা হয় তাই "সালাতুন তাহাজ্জুদ" বা তাহাজ্জুদ নামাজ। 


ইসলাম আমাদেরকে বছরের অন্যান্য সময়ের মত রমজান মাসে তাহাজ্জুদ নামাজের ব্যাপারে বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে। রমজান মাসে তাহাজ্জুদ নামাজের সুফল বহুগুণ বেড়ে যায়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার আগে রাসুলুল্লা (সাঃ) এর উপর তাহাজ্জুদের নামাজ বাধ্যতামূলক ছিল। তাই তিনি কখন তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া থেকে বিরত হননি। তাই আমরা আজকের পোস্টে জানবেনা, তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম, ফজিলত ও দোয়া। 

পেজ সূচিপত্রঃ-

তাহাজ্জুদ নামাজ নফল নাকি সুন্নত?

তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত এই অর্থে যে রাসূল (সাঃ) পড়েছেন। রাসূল (সাঃ) এর যেকোনো আমল আল্লাহর বান্দাগণ অনুসরণ করলে সেটা সুন্নাহ। আর ফরজ ছাড়া যত ইবাদত রয়েছে, সবই নফল ইবাদতের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। তাই আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত সালাতকে ফরজ নামাজ বলে ঘোষণা করেছেন। এছাড়া যত সালাত আছে, সব নফল বা অতিরিক্ত সালাত। সুতরাং নফল সালাত হুকুমের মধ্যে আসেনি। আর সুন্নাহকে ওলামায়ে কেরামগণ হুকুমের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। হুকুম হলো বিধান।

তাহাজ্জুদ নামাজ কত রাকাআত? 

কোন হিসাব ছাড়া জান্নাতে যেতে বাধা থাকবে না, তারা হলেন রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারী বান্দা। আর এই মুমিন বান্দার জন্য এটা সফলতা। এই কারণে মুমিন মুসলমানেরা রাতের গভীরের তাহাজ্জুদের নফল নামাজ আদায়ে নিয়োজিত হয়। ধর্মপ্রাণ মুমিন বান্দা তাহাজ্জুদের এই নামাজ কত রাকাআত পড়বেন? হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার উত্তর থেকে এই সমাধান বের করা হল।

আরো পড়ুনঃ- নরমাল ডেলিভারি কি। নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সহজ উপায় 

হযরত আবু সালামা ইবনে আব্দুর রহমান রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, তিনি হজরত আয়েশা রাদিআল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞেস করেন যে, রমজানে প্রিয় নবীর নামাজ কেমন হতো? মা আয়েশা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানে এবং রমজানের বাইরে ১১ রাকাআতের বেশি পড়তেন না-

  • প্রথমে চার রাকাআত পড়তেন; যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো না।
  • তারপর আরো চার রাকাআত পড়তেন; যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা তো বলাই বাহুল্য। 
  • তারপর তিন রাকাআত (বিতর) পড়তেন;

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, যখন প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করেন, তখন আমি সর্বপ্রথম বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন হে লোকেরা।তোমরা নামাজের প্রসার কর, খাদ্য দান কর, আত্নীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখো এবং রাতে নামাজ (তাহাজ্জুদ)  আদায় করো। যখন মানুষেরা ঘুমিয়ে থাকে। তাহলে নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করবে। রাতের এই তাহাজ্জুদ নামাজ নফল ইবাদত। নফল নামাজ রাকাআত নির্ধারিত নাই। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়মিত নির্ধারিত রাকাআতও আদায় করেননি। তাই যারা সক্ষম তারা যেমন আরো বেশি নফল (তাহাজ্জুদ) আদায় করতে পারবেন। আর যারা দূর্বল বা অক্ষম তারা চাইলে নূন্যতম ২ রাকাআত ও আদায় করতে পারবেন। আর নফল ইবাদত যে যত বেশি পড়বে, সে ততো বেশি সাওয়াব পাবে।

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম 

তাহাজ্জুদ একটি নফল ইবাদত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ)  তাহাজ্জুদ নামাজ দুই রাকাত দুই রাকাআত করে আদায় করতে। তিনি কখনো চার রাকাআত, কখনো আট রাকাআত এবং কখনো ১২ রাকাআত পড়েছিলেন। 

কিন্তু কেউ যদি এই নামাজ দুই রাকাআত আদায় করেন, তাহলেও তার তাহাজ্জুদ আদায় হবে। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি এশার পর দুই বা ততোধিক রাকাআত নামাজ পড়ে নেয়, সে হবে তাহাজ্জুদ ফজিলতের অধিকারী"।

আরো পড়ুনঃ- প্রফেশনাল ফেসবুক পেইজ খোলার নিয়ম। ফেসবুক পেইজ কেন খুলবো

তবে যেকোনো সূরা দিয়ে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া যায়। নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যথাসম্ভব লম্বা কেরাত, লম্বা রুকু ও সেজদা সহকারে একান্ত নির্দিষ্ট মনে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন। তাই লম্বা কেরাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা উত্তম। কেরাত উচুঁ বা নিচুঁ উভয় আওয়াজে পড়া জায়েজ আছে। তবে কারও কষ্টের কারণ হলে চুপিচুপি পড়া কর্তব্য।

তাহাজ্জুদ নামাজ কিভাবে পড়তে হয়?

প্রিয়নবি (সাঃ) প্রতিবার দুই রাকাআত করে এই নামাজ আদায় করতেন। যেকোনো সূরা দিয়েই এই নামাজ পড়া যায়। তবে তিনি লম্বা কেরাতে নামাজ আদায় করতেন। তাই লম্বা কেরাতে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা উত্তম। 

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার সময় 

ইশার নামাজ আদায়ের পর থেকে সুবহে সাদেকের আগ পর্যন্ত সালাতুন লাইন বা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যায়। তবে অর্ধ রাতের পর তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া ভালো। শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা উত্তম। তাহাজ্জুদ নামাজ রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পড়া উত্তম। তাহাজ্জুদের মূল সময় মূলত রাত দুইটা থেকে শুরু হয়ে ফজরের আযানের আগ পর্যন্ত থাকে।

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে কি হয়

তাহাজ্জুদ নামাজ অনেক বরকতময় নামাজ। এই নামাজে আল্লাহ সাথে বান্দার সম্পর্ক তৈরি হয়।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত বাংলা উচ্চারণসহ

বাংলা উচ্চারণঃ- " নাওয়াইতু আন উছোয়াল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকাতাই ছলাতিত তাহাজ্জুদী সুন্নত রাসুলিল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবর "। 

অর্থঃ- আমি আল্লাহর ওয়াস্তে কেবলার দিকে মুখ করিয়া তাহাজ্জুদের দুই রাকাআত সুন্নাত নামাজের নিয়ত করিলাম। "আল্লাহু আকবার"

তাহাজ্জুদ নামাজের বাংলা নিয়ত

আমরা সাধারণত নামাজের নিয়ত আরবিতে করে থাকি। কিন্তুু নামাজের জন্য আরবিতে নিয়ত করা জরুরি না। এর জন্য বাংলা নিয়ত করলেই যথেষ্ট।

অর্থঃ- দুই রাকাআত তাহাজ্জুদের নিয়ত করছি, তারপর আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত বেঁধে নামাজ পড়া। 

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম 

প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই দুই রাকাআত করে এই নামাজ আদায় করতেন। যেকোনো সূরা দিয়েই এই নামাজ আদায় করা যায়। আমাদের প্রিয়নবী লম্বা কেরাতে নামাজ আদায় করতেন। তাই লম্বা কেরাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা উত্তম। ত

  • তাকবিরে তাহরিমা আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত বাঁধা। 
  • তারপর ছানা পড়া। 
  • তারপর সূরা ফাতেহা পড়া।

সূরা মিলানো তথা কেরাত পড়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক লম্বা কেরাত পড়তেন। তারপর অন্যান্য নামাজের ন্যায় রুকু, সেজদা আদায় করা। এভাবেই দ্বিতীয় রাকাআত আদায় করে তাশাহহুদ, দরুদ ও দোয়া মাছুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা। এইভাবে দুই দুই রাকাআত করে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা উত্তম। 

তাহাজ্জুদ নামাজের দোয়া / উচ্চারণ ও অর্থ

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গভীর রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের জন্য ওঠে কুরআনের এ আয়াতসহ সূরা- আল-ইমরানের শেষ পর্যন্ত পড়তেন।

উচ্চারণঃ- রাব্বনা মা খালাক্বতা হাজা বাত্বিলান, সুবহানাকা ফাক্বিনা 'আজাবান্নার। রাব্বানা ইন্নাকা মাং তুদখিলিন্নারা ফাক্বাদ্ আখঝাইতাহু, ওয়া মা লিজজ্বালিমিনা মিন আংছার। রাব্বানা ইন্নানা সামি'না মুনাদিআই ইউনাদি লিল ইমানি আন আমিনু বিরাব্বকুম ফআমান্না, রাব্বানা ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া কাফফির আন্না সাইয়্যেআতিন ওয়া তাওয়াফফানা মাআ'ল আবরার।

অর্থঃ- হে আমাদের প্রতিপালক! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি। পবিত্রতা তোমারই জন্য। আমাদেরকে তুমি জাহানড়বামের শাস্তি থেকে বাঁচাও। হে প্রতিপালক! নিশ্চয়ই তুমি যাকে জাহানড়বামে নিক্ষেপ করে তাকে অপমানিত কর। আর যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। হে আমাদের প্রভু! আমরা ইমান আনার জন্য একজন আহবানকারীকে আহবান করতে শুনে ইমান এনেছি। হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি আমাদের সকল গোনাহ মাফ করে দাও। আমাদের সকল দোষ ক্রটি দূর করে দাও।  আর নেক লোকদের সাথে আমাদের মৃত্যু দাও।

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

পবিত্র নামাজের জন্য বিশেষভাবে তাগিদ করা হয়েছে। 

  • তারা রাতের সামান্য অংশই নিন্দ্রায় জন্য অতিবাহিত করে এবং রাতের শেষ প্রহরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। তাই তাহাজ্জুদের নামাজের গুরুত্ব বেশি।
  • আল-কুরআনের সূরা আল মুজাম্মিল এই উল্লেখ করা হয়েছে  "অবশ্য রাতের ঘুম থেকে উঠা মনকে দাবিত করার জন্য খুব বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখে এবং সে সময়ের কুরআন শরীফ পাঠ বা জিকির করা একেবারে যথার্থ"। 
  • আল্লাহর প্রিয় বান্দা তারাই, যারা তাদের রবের দরবারে জিজদা করে থাকে, দাঁড়িয়ে থেকেই রাত কাটিয়ে দেয়। 
  • তারা ছিল কঠিন পরীক্ষায় পরম ধৈর্যশীল বান্দা, অটল-অবিচল, সত্যের অনুসারি, পরম অনুগত্য। আল্লাহর পথে সকল ধন-সম্পদে উৎসর্গকারি এবং রাতের শেষ প্রহরে আল্লাহর কাছে ভুল-ক্রটির ক্ষমাপ্রার্থী "। সূরা আল- ইমরান। 
  • ফরজ নামাজের পর অন্যান্য সুন্নাত ও নফল সব নামাজের মধ্যে তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব ফজিলত সবচেয়ে বেশি। 
  • তারপর তিনি বলেন, তোমরা কি আমাকে ডাকবে। আমি তার ডাকে সাড়া দিব। কে আমার কাছে কিছু চাইবে আমি তাকে তা দেব, কে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।
  • রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন ; যে ব্যক্তি রাতে ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে এবং সে তার স্ত্রীকেও ঘুম থেকে জাগিয়ে নামাজ পড়ায় এমনকি সে যদি জেগে না উঠে, তবে তার মুখে খানিকটা পানি ছিটিয়ে দেয় তাহলে তার প্রতি আল্লাহ বর্ষন করে। অনুরূপভবে, স্ত্রী যদি ঘুম থেকে উঠে তার স্বামী জাগ্রত করে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে, এবং সে তার স্বামীকে নামাজের জন্য জাগায় এমনকি স্বামী না জাগলে স্ত্রী তার মুখে পানি ছিটিয়ে তার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দেয় তাহলে তার প্রতিও আল্লাহর রহমত বর্ষিত হতে থাকে।

মহিলাদের তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম 

তাহাজ্জুদের নফল নামাজকে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শ্রেষ্ঠ নফল ইবাদত হিসাবে অ্যাখ্যায়িত করেছেন। তিনি নিয়মিত তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতে এবং সাহাবীদের এটা পালনে উৎসাহিত করতেন। কুরআনের বিভিন্ন সূরায় এই নামাজের প্রতি তাগিদ দেয়া  হয়েছে। 

পুরুষ আর মহিলাদের জন্য তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের পদ্ধতি নারীরা পুরুষের মত রাতের দ্বিপ্রহরে তাহাজ্জুদ নামাজ নফল নামাজের মতই আদায় করে নিবেন নফল নামাজের মতই নামাজের নিয়ত করে প্রথমে ছানা পড়ে পরবর্তীতে সূরা ফাতেহা সূরা মিলিয়ে রুকু সেজদা করে অন্য নামাজের মত সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবেন তবে প্রত্যে নামাজের নিয়ত করতে হবে।

তাহাজ্জুদ নামাজ পুরুষ ও মহিলা সকলেই পড়তে পারে। আল্লাহ তাআলা পুরুষ মহিলা সবাইকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে তাহাজ্জুদের নামাজের কোন পার্থক্য নাই।

তাহাজ্জুদ নামাজের মোনাজাত 

হে আল্লাহ! আপনার কাছেই  আমি আত্নসমর্পণ করলাম, আপনার ওপর ইমান আনলাম, আপনার ওপরই ভরসা করলাম, আপনার দিকে রুজু করলাম, আপনার (সন্তুষ্টির জন্যই) শত্রুতায় লিপ্ত হলাম, আপনাকে বিচার মেনে নিলাম। তাই আপনি আমার আগের-পরের প্রকাশ্য ও গোপন সব পাপ অপরাধ ক্ষমা করুন। আপনি শুরু এবং আপনিই শেষ মালিক। 



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url