নতুন ভোটার আইটি কার্ড করার নিয়ম - অনলাইনে ভোটার আইটি কার্ড করার নিয়ম ২০২২

 অনলাইনে ভোটার আইটি কার্ড করার নিয়ম ২০২২ - নকজন নাগরিক জন্য ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সনদ। ভোটার আইডি কার্ড হলো একজন নাগরিকের একটি দেশের পরিচয়পত্র। আপনি কি নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে চান? যদি আপনার বয়স ১৮ এর উপরে হয়ে থাকে এবং আপনার ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করা না থাকে তাহলে দেরি না করে ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করে ফেলেন। ভোটার আইডি কার্ডের মাধ্যমে জানা যায় আপনি কোন দেশের নাগরিক ।


ভোটার আইডি কার্ড আরো প্রয়োজন পড়ে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে যেমনঃ সিম কার্ড রেজিষ্ট্রেশন করতে, বিভিন্ন চাকরির জন্য, পাসপোর্ট তৈরির জন্য, এছাড়াও বর্তমানে ভ্যাকসিন দেয়ার কারণে ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন। আপনারা এই নিয়মগুলো অনুসরণ করলে এবং সঠিক ভাবে তথ্য পূরণ করলে নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে নতুন ভোটার আইডি কার্ড হাতে পাবেন। আপনারা যারা ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করেননি বা ভোটার আইডি  কার্ড তৈরি  করার সময় কোন ভাবে মিস করেছেন, তারা পোস্টের সহায়তা গ্রহণ করে যাবতীয় দিকনির্দেশনা অনুসরণ করুণ। আপনারা আরো জানতে পারবেন অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম। 

পোস্ট সূচিপত্রঃ

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম  

নতুন ভোটার আইডি কার্ড আবেদন করার প্রক্রিয়া হলো চলমান একটি প্রক্রিয়া। বর্তমানে আপনার বয়স যদি ১৮ বছর বা তার বেশি হয়ে থাকে আপনি নতুন ভোটার আইডি কার্ড এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। বর্তমানে আপনি ডিজিটাল বাংলাদেশে এ ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। আপনার যদি অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড আবেদন করার শেষ হলে একটি নতুন পিডিএফ পাবেন। 

আরো পড়ুনঃ বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম-কন্টেন্ট লিখে টাকা ইনকাম করার উপায় 

তারপর আপনি পিডিএফটি কে প্রিন্ট করবেন। এর সাথে আপনি আরো আরো কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিলেই কয়েক দিনের পরে আপনি বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়া শেষ করে আপনার নতুন ভোটার আইডি কার্ড পেয়ে যাবেন। নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২২ সম্পূর্ণ বিষয়টি নিচে আলোচনা করা হল।

আপনাকে ভোটার আইডি কার্ড এর জন্য আবেদন করার নিম্নোলিখিত যোগ্যতা থাকতে হবে ঃ

  • আপনাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে 
  • আপনার বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হতে হবে।
  • পূর্বে জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করেননি এমন ব্যক্তি হতে হবে।

ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য আপনার যা প্রয়োজন

জাতীয় পরিচয় পত্র বা নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য প্রথমে আপনাকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে যা পূর্বে বলা হয়েছে। আবেদনের শেষে আপনি একটি পিডিএফ ফাইল পাবেন। আপনি পিডিএফ ফাইলের সাথে আপনাকে কিছু কাগজপত্র সংযুক্ত করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য যে সকল কাগজ পত্র লাগবে তার লিস্ট নিচে দেয়া হল।

  • অনলাইনে আবেদন করার ফর্ম এর প্রিন্ট কপি।
  • এসএসসি অথবা সমমানের সার্টিফিকেট এর প্রিন্ট কপি (বয়স প্রমাণের জন্য)
  • জন্ম সনদ ( বাংলা অথবা ইংরেজি ) 
  • বাবা-মা এর ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি অবশ্যই লাগবে।
  • বাড়ির বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি ( ঠিকানা প্রমাণের জন্য)
  • আপনি যদি ভাড়া বাড়িতে থাকেন তাহলে বাড়ি ভাড়া রশিদ আপনাকে দিতে হবে।
  • হোল্ডিং ট্যাক্স ( ঠিকানা প্রমাণের জন্য) 
  • মোবাইল নাম্বার 
  • ব্লাড গ্রুপের প্রমাণপত্র

আপনি উপরের সব কাগজপত্র একসাথে সংযুক্ত করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিলেই আপনার আবেদনটি জমা হয়ে যাবে। আমরা এখন দেখব আপনারা কিভাবে  অনলাইনে আবেদন করবেন।

ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন ২০২২

অনলাইনে আবেদন করার সুবিধা হল আপনি বাড়িতে বসে আবেদন করতে পারবেন এবং ভুল হবার সম্ভাবনা খুব কম থাকবে। আপনি ওয়েবসাইটে যাওয়ার পর নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করলে, খুব সহজে অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

নতুন  ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম - ধাপ (১)

আপনি যদি অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ডের আবেদন করার জন্য আপনার মোবাইল অথবা আপনার ল্যাপটপ থেকে প্রথমে নির্বাচন কমিশন এর ওয়েবসাইট service.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে যেতে হবে।

নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে যাওয়ার পর এরকম একটি ইন্টারফেস আসবে। এখন আপনাকে আবেদন করার জন্য Get started বাটনে ক্লিক করতে হবে। এটি ইংরেজি করা আছে তাই Get started বাটন দেখা যাচ্ছে। যদি  বাংলা থাকেন আবেদন করুণ লেখা উঠবে।


এখন উপরের মত একটি পেইজ আসবে। এখানে আপনার পুরো নাম ইংরেজিতে দিতে হবে। কিন্তুু আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে আপনার জন্ম নিবন্ধন অনুসারে এখানে ইংরেজি নামটি দিবেন এবং জন্মতারিখ দিবেন। আপনি যদি ভুল নাম বা ভুল জন্মতারিখ দেন  পরবর্তীতে আর সংশোধন করার উপায় নেই।




এখন আপনি দেখবেন উপরের পেইজটি আসবে। এখানে আপনি মোবাইল নাম্বার দিবেন এবং পরে আপনার মোবাইলে ৬ ডিজিটের ওটিপি আসবে।


এখন উপরের পেইজটি আসবে এখানে আপনার ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে কন্টিনিউ করলে আপনার একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে। আপনাকে অবশ্যই ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড টি মনে রাখতে হবে। পরবর্তীতে যখন এডিট করার প্রয়োজন হবে তখন ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড লাগবে লগ ইন করার জন্য।

মনেরাখবেন আপনার ইউজারনেম অন্য কারো সাথে যেন না মিলে। তাই মাথা খাটিয়ে এটা লিখুন যেন ইউনিক হয়।

ব্যাক্তিগত তথ্য প্রদান -ধাপ(২)। নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম 

জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদনের সিস্টেমে অ্যাকাউন্ট রেজিষ্ট্রেশন হলে, আপনি নিচের মত একটি ড্যাশবোর্ড দেখবেন। যদি অটোমেটিক লগ ইন না হতে পারেন, আপনার ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করতে পারবেন।





এখান থেকেই আপনি নতুন জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করবেন। আপনার প্রোফাইল অপশনে ক্লিক করুণ এবং উপরের ডান পাশ থেকে এডিট বাটনে ক্লিক করুন। তারপরে, আপনি নিচের মত একটি পেইজ পাবেন, যেখানে আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য, অন্যান্য তথ্য ও ঠিকানা লিখতে হবে। 



এখানে আমাদের তিন ধরণের ইনফরমেশন দিতে হবে প্রথমে দিতে হবে পার্সোনাল ইনফরমেশন দিতে হবে। তারপরে দিতে হবে আইডেন্টিফিকেশন ইনফরমেশন দিতে হবে। সর্বশেষ এ্যাড্রেস। এ সকল ইনফরমেশন দেওয়া জন্য এডিট  বাটনে ক্লিক করব এরপর নিচের মত ইন্টারফেস আসবে।



এখানে আপনার নাম বাংলায়, আপনার জন্মতারিখ, আপনার ব্লাড গ্রুপ, আপনার বাবা-মা ইনফরমেশন সহ আপনার যাবতীয় যত ইনফরমেশন আছে সবকিছু পূরণ করতে হবে। আপনাকে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে কিছু কিছু ঘরে লাল স্টার দেয়া রয়েছে সে গুলো অবশ্যই পূরণ  করতে হবে। এখানে আপনার সকল ইনফরমেশন দিয়ে এরপর Identification Information এ চলে যাবেন যেমনটি নিজের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন।



এখানে আপনার পেশা, শিক্ষাগত যোগ্যতা,  ড্রাইভিং লাইসেন্স নাম্বার,  পাসপোর্ট নাম্বার,  ধর্ম ইত্যাদি  বিষয়ে পূরণ করে নিবেন। এরপর এ্যাড্রেস ট্যাব এ যাবেন। যেমনটি নিচের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন।



এখানে আপনাকে ঠিকানার অপশনে গিয়ে এবং আপনার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা বাছাই করুণ। এবার আপনি অবস্থানরত দেশ বাছাই করুণ। তারপর আপনি বর্তমান নাকি স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার হতে চান সেই ঠিকানার পাশে ( এই ঠিকানায় ভোটারের পাশে টিক দিন)

বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা নির্বাচন করুন এবং ভোটার এরিয়া নির্বাচন করুন।

পরবর্তী ধাপে আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করতে হবে। 

উপরের সকল তথ্য দেয়া হলে আপনাকে Next বাটনে ক্লিক  করে পরবর্তী ধাপে  যেতে হবে।


এখানে উপরের মত একটি ইন্টারফেস আসবে। এখানে ডকুমেন্টস আপলোডের কথা বলা হয়েছে  কিন্তুু অনলাইনে আপনাকে কোনো ডকুমেন্টস আপলোড করতে হবে না। এখন Next বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে। 

এখন উপরের মত ইন্টারফেস আসবে। এখানে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড এর আবেদন জমা হয়ে যাবে। 

কাগজপত্র  আপলোড ও আবেদন জমা-ধাপ(৩)। নতুন  ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম 

আপনি যে আবেদন ফরম টি পেলেন সেখানে কিছু অংশ  খালি থাকবে সেখানে একজন সনাক্তকারি আইডি কার্ড নম্বর দিতে হবে এটি হতে পারে আপনার পিতা -মাতা বা আপনার নিকট আত্নীয়। 

এরপর, আবেদন ফরমের সাথে কিছু ডকুমেন্ট যুক্ত করতে হবে যা পূর্বে আলোচনা করেছি। আপনাদের সুবিধার্থে এখানে আবার দিয়ে দিচ্ছি। 

  • অনলাইনে আবেদন করার ফর্ম এর প্রিন্ট কপি।
  • এসএসসি অথবা সমমানের সার্টিফিকেট এর প্রিন্ট কপি (বয়স প্রমাণের জন্য)
  • জন্ম সনদ ( বাংলা অথবা ইংরেজি ) 
  • বাবা-মা এর ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি অবশ্যই লাগবে।
  • বাড়ির বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি ( ঠিকানা প্রমাণের জন্য)
  • আপনি যদি ভাড়া বাড়িতে থাকেন তাহলে বাড়ি ভাড়া রশিদ আপনাকে দিতে হবে।
  • হোল্ডিং ট্যাক্স ( ঠিকানা প্রমাণের জন্য) 
  • মোবাইল নাম্বার 
  • ব্লাড গ্রুপের প্রমাণপত্র

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম -ধাপ(৪)। ভেরিফিকেশন

আপনার আবেদনটি উপজেলা বা জেলা নির্বাচন অফিস যাচাই বাছাই করবে। যাচাই করার জন্য আপনার সাথে তারা যোগাযোগ করতে পারে।


নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২২-ধাপ(৫)। বায়োমেট্রিক প্রদান

আবেদনটি যাচাই শেষে আপনার ছবি ও আঙুলের ছাপ (Biometric Information) নেয়ার জন্য ডাকা হবে। এর পর ১০ থেকে ১৫ দিন পরে আপনার আবেদনটি অনুমোদিত হলেই আপনি অনলাইন হতে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। 

শেষ কথা

আজকে আমরা আলোচনা করলাম নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২২। আরো আলোচনা করেছি অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম নিয়ে এবং আপনি অনলাইনে কিভাবে আবেদন করবেন সেই বিষয় নিয়ে। যদি কোন ভুল হয় আপনারা কমেন্ট  করে বলবেন।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url